Passport correction -পাসপোর্ট সংশোধন করতে কি কি লাগে এবং ই পাসপোর্ট সংশোধন ফি

Passport correction :  আগে MRP পাসপোর্টে ভুল থাকলেও তা সংশোধন করা যেতো না তবে ই পাসপোর্ট চালু হওয়ার পরে পূর্বের পাসপোর্টে থাকা ভুল এখন সংশোধনের সুযোগ দিয়ে পাসপোর্ট সংশোধনের প্রজ্ঞাপন জারি করেছে। প্রবাসী এবং দেশে বসবাসকারীদের মধ্যে এখন সচেতনতা বৃদ্ধি পেয়েছে ফলে পাসপোর্ট এর ভুল সংশোধনের পরিমাণ বেড়েছে।

পাসপোর্ট সংশোধন করতে কি কি লাগে এবং পাসপোর্ট সংশোধন করতে কত টাকা লাগে – Passport correction 2023

আগে পাসপোর্টের ভুল সংশোধন করতে কোর্ট এফিডেফিট এর প্রয়োজন হতো। ১৩ ডিসেম্বর ২০২২ তারিখে পাসপোর্ট সংশোধনের সর্বশেষ প্রজ্ঞাপন জারির মাধ্যমে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে পাসপোর্ট সংশোধনে কোন প্রকার কোর্ট এফিডেফিট লাগবে না। তাই সুযোগ থাকতে থাকতে পাসপোর্ট সংশোধন করে নেওয়া উত্তম কাজ।

এক নজরে দেখে নিতে পারবেন, এই আর্টিকেল এ কি কি থাকছে।

পাসপোর্ট এ ভুল আছে কি না তা বুঝবো কি ভাবে?

  • বাচ্চাদের ক্ষেত্রে
  • প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের ক্ষেত্রে

পাসপোর্ট সংশোধন করতে কি কি লাগে?

  • নামে ভুল হলে
  • বৈবাহিক অবস্থা পরিবর্তন হলে
  • পেশা পরিবর্তন হলে
  • ঠিকানা সংশোধনের ক্ষেত্রে

পাসপোর্ট সংশোধন করতে কত টাকা লাগে?

সংশোধন হওয়া পাসপোর্ট ডেলিভারি সময়

পাসপোর্ট এ ভুল আছে কি না তা কি ভাবে বুঝবো? Passport correction 2023

Passport correction

আমরা মনে করি আমাদের পাসপোর্ট সঠিক আছে এবং কি ধরনের ভুল আছে তা নিয়ে খুজেও দেখি না, তাই যখন পাসপোর্ট এর আবেদন করতে যায় আর অফিস ভুল ধরে তখনই আমাদের মাথার টনক নড়ে।

নিচে কিছু পয়েন্ট দিলাম যদি আপনার পাসপোর্ট টি তে এমন দেখতে পারেন তবে বুঝবেন ভুল আছে।

💨 বাচ্চাদের ক্ষেত্রেঃ

  1. বাবা মায়ের NID অনুযায়ী জন্মসনদের তাদের নামের বানান এলোমেলো থাকলে। ১ টি অক্ষর ভুল থাকলেও ভুল।
  1. পিতা মাতার NID তে MD /​MST নেই কিন্ত সন্তানের জন্মসনদে আছে, সেটাও ভুল হিসাবে ধরা হবে।
  1. জন্মসনদ ডিজিটাল এবং ইংরেজি ভার্সনের হতে হবে।
  1. জন্মসনদ এর অনলাইন কপি চেক করে দেখতে হবে, ভুল আছে কি না।

💨 প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের ক্ষেত্রেঃ

নিজ নামে ভুলঃ পূর্বের পাসপোর্ট এর সাথে বর্তমানে আপনার কাছে থাকা NID র ১০০% মিল আছে কি না চেক করুন। MD, MST, অথবা নামের টাইটেল মোল্লা‘র যায়গা শিকদার, বিশ্বাসের যায়গা মন্ডল এমন আছে কি না।

  • অনেকে আগে জন্মসনদ দিয়ে পাসপোর্ট করেছে কিন্ত জন্মসনদ অনুযায়ী ভোটার হয়নি ফলে বর্তমানে NID এবং পাসপোর্ট এ নামে ভুল থেকে গেছে।

পিতা- মাতার নামে ভুলঃ এই ভুল হয়েছে ভোটার হওয়ার সময় পিতা মাতার NID অনুযায়ী নাম না দেওয়ার কারনে। অনেক সময় দেখা যায় ছেলের NID তে পিতার নাম গফুর মোল্লা ওদিকে পিতার NID তার নাম মোঃ গফুর রহমান।

স্বামী /​স্ত্রীর নামে ভুলঃ এই ধরনের ভুল থাকার সম্ভাবনা থাকে ৮০ ভাগ। কারন আগে MRP পাসপোর্ট করার সময় NID ডাটাবেইজ চেক করা হতো না। তাছাড়া ভোটার হওয়ার সময় স্বামীর বা স্ত্রীর NID তে থাকা নামের যায়গায় বাড়িতে যে ডাক নাম থাকে সেটাই এন্ট্রি করে নেওয়ার কারনে ভুল হয়ে গেছে জাতীয় পরিচয়পত্রে [ এটা চেক করতে NID কার্ড এর ডাটাবেজ চেক করুন]

জন্মস্থান ভুলঃ অনেক সময় পাসপোর্ট যেখান থেকে করা হয়েছিলো সেটাই জন্মস্থান দিয়ে দেওয়া হয়েছে MRP পাসপোর্ট এ। তাছাড়া মহিলাদের ক্ষেত্রে এটাও বেশি ভুল হয়। কারন তাদের এক জেলা থেকে অন্য জেলায় বিয়ে হয়ে থাকে।

জন্মতারিখ ভুলঃ এই ভুল টা যতটা না পাসপোর্ট অফিসের ভুল তার চেয়ে পাসপোর্ট আবেদনকারীদের ইচ্ছা কৃত ভুল।

  • প্রথমে পাসপোর্ট করেছে জন্মসনদ দিয়ে পরে ভোটার হয়েছে আন্দাজে জন্মতারিখ দিয়ে।
  • জন্মসনদে বয়স করিয়ে অথবা বাড়িয়ে পাসপোর্ট করে দেশের বাইরে কাজ করতে গেছে। আবার দেশে এসে নিজের ইচ্ছা মতো ভোটার হয়েছে
  • নির্বাচন অফিসের কিছু ভুল তো আছেই। কাজ করতে গিয়ে এমনও পেয়েছি বাবার থেকে ছেলে বড়ো হয়ে গেছে বয়সে।

ঠিকানা, পোস্ট, উপজেলা ভুলঃ MRP পাসপোর্ট এ যা ইচ্ছা তাই করা যেতো ফলে এমন ভুল অহরহ আছে।

বিঃদ্রঃ এমন অনেক ভুল থাকতে পারে আপনার পাসপোর্ট এ। হোক তা ইচ্ছা করে অথবা অনিচ্ছাকৃত। বর্তমানে ই পাসপোর্ট আবেদন করার সময় NID ডাটাবেইজ এবং বাচ্চাদের ক্ষেত্রে জন্মনিবন্ধন অনলাইন কপি চেক করে দেখতে ভুলবেন না।

নতুন পাসপোর্ট করার নিয়ম : পাসপোর্ট করতে কি কি লাগে

পাসপোর্ট সংশোধন করতে কি কি লাগে – Passport correction 2023

পাসপোর্ট সংশোধন করতে লাগেঃ

  1. পূর্বের পাসপোর্ট
  2. জাতীয় পরিচয়পত্র
  3. নাগরিক সনদ
  4. পেশা প্রমাণের সনদ
  5. সার্টিফিকেট ( যদি থাকে)
  6. আবেদনের সামারি কপি
  7. আবেদন কপি
  8. পেমেন্ট স্লিপ
  9. রি ইস্যু ফরম
  10. প্রতিজ্ঞাপত্র বা কমিটমেন্ট ফরম।

বিঃদ্রঃ অপ্রাপ্তবয়স্কদের ক্ষেত্রে বাবা মায়ের NID এবং আবেদনকারীর BRC লাগে।

তবে প্রতিটি ভুলের জন্য আলাদা আলাদা ডকুমেন্টস লাগে তাই এই আর্টিকেল এ চেস্টা থাকবে ভুলের ধরন অনুযায়ী আলাদা আলাদা ডকুমেন্টস উল্লেখ করা।

নামে ভুল হলেঃ

  • প্রাপ্তবয়স্কদের নিজ নাম, পিতা- মাতা এবং স্ত্রীর নামের ভুল সংশোধন করতে জাতীয় পরিচয়পত্র, সার্টিফিকেট ( যদি থাকে), পূর্বের পাসপোর্ট, নাগরিক সনদ, পেশা প্রমানের সনদ, আবেদন কপি, পেমেন্ট স্লিপ, রি ইস্যু ফরম, প্রতিজ্ঞাপত্র বা কমিটমেন্ট ফরম লাগবে।
  • অপ্রাপ্তবয়স্ক বা বাচ্চাদের ক্ষেত্রে উপরের ডকুমেন্ট সহ জন্মনিবন্ধন সনদ এবং পিতা মাতার NID বাধ্যতামূলক। তবে অবশ্যই পিতা মাতার NID তে তাদের নাম যে ভাবে লেখা আছে ঠিক সেই ভাবেই লেখা থাকতে হবে সন্তানের জন্মসনদে।

বৈবাহিক অবস্থা পরিবর্তন হলেঃ

  1. অবিবাহিত থেকে বিবাহিত হলে, অর্থাৎ আগের পাসপোর্টে স্ত্রীর নাম দেওয়া ছিলো না এখন নতুন পাসপোর্টে স্ত্রীর নাম দিতে হলে বিবাহ প্রমাণের সনদ লাগবে। কাবিননামা, কোট ম্যারেজ সার্টিফিকেট, হিন্দুদের ক্ষেত্রে হিন্দু বিবাহ নিবন্ধন সনদ, অন্যান্য ধর্মালম্বীদের ক্ষেত্রে আলাদা আলাদা বৈবাহিক সনদ।
  1. স্বামী অথবা স্ত্রীর বিচ্ছেদ হলে ডিভর্স পেপার লাগবে। যদি পাসপোর্টে স্বামী / স্ত্রীর নাম থাকে এবং ঐ স্বামী / স্ত্রীর সাথে বিচ্ছেদ হয়ে যায় তবে স্ত্রীর / স্বামীর নাম বাদ দিতে চাইলে ডিভর্স পেপারের ফটোকপি জমা দিতে হবে পাসপোর্ট আবেদনের সাথে।
  1. মৃত স্বামী /​স্ত্রীর নাম পাসপোর্ট থেকে বাদ দিতে চাইলে আবেদনের সাথে মৃত্যু সনদ এর ফটোকপি জমা দিতে হবে।
  1. পূর্বের স্বামী / স্ত্রীর সাথে বিচ্ছেদ হয়েছে এবং পাসপোর্ট থেকে পূর্বের স্ত্রী / স্বামীর নাম বাদ দিয়ে নতুন স্বামী / স্ত্রীর নাম দিতে চাইলে, একটি ডিভর্স পেপার এবং একটি কাবিননামা বা বিবাহ প্রমাণের ডকুমেন্টস লাগবে।

( যে স্ত্রী /​স্বামী‘র সাথে বিচ্ছেদ হয়েছে সেটার ডিভর্স পেপার এবং নতুন বা বর্তমান স্ত্রী /​স্বামীর কাবিননামা বা বিবাহ নিবন্ধন সনদ। )

পেশা পরিবর্তন হলেঃ

পূর্বের পাসপোর্ট আবেদনের সময় কি পেশা দেওয়া হয়েছিলো তা অনেকেই মনে থাকে না, এটা নিয়ে সাধারণ মানুষের চিন্তার কিছু নেই। আপনি বর্তমানে যে পেশায় আছেন তার ডকুমেন্ট দিলেই হবে।

  • যদি আপনি সরকারী চাকরী করতেন কিন্ত এখনে অবসরে আছেন এমন হলে PRL এর ডকুমেন্ট এর ফটোকপি পাসপোর্ট আবেদনের সাথে জমা দিবেন।
  • আগে ছাত্র ছিলেন বর্তমানে কোন প্রতিষ্ঠানে জব করেন ( বেসরকারি অথবা স্বায়ত্তশাসিত ) এমন হলে ঐ প্রতিষ্ঠান থেকে একটি প্রত্যয়ন বা NOC জমা দিবেন আবেদনের সাথে।
  • আগের পাসপোর্টে ছাত্র বা অন্য পেশা দেওয়া ছিলো এখন সরকারী চাকুরী করেন এমন হলে পাসপোর্ট রিনিউ করার সময় উক্ত অফিস যে মন্ত্রণালয়ের আন্ডারে সেখান থেকে GO /​NOC নিতে হবে।

ঠিকানা সংশোধনের ক্ষেত্রেঃ

আবেদন কপির সাথে বিদ্যুৎ বিলের কাগজ /​পানির বিলের কাগজ এগুলো জমা দিলেই হবে।

পাসপোর্ট সংশোধন করতে কত টাকা লাগে?

পাসপোর্ট সংশোধন করতে ৪,০২৫৳ টাকা থেকে ১৩,৮০০৳ টাকা লাগে। পাসপোর্ট সংশোধন ফি পাসপোর্ট এর ধরণ এবং কত দ্রুত পাসপোর্ট পেতে চাচ্ছেন তার উপর নির্ভর করে।

পাসপোর্ট সংশোধন ফি

৫ বছর মেয়াদী ৪৮ পৃষ্ঠার পাসপোর্ট সংশোধন ফিঃ

  • নিয়মিতঃ ৪,০২৫ ৳
  • জরুরীঃ ৬,৩২৫ ৳
  • অতি জরুরীঃ ৮,৬২৫ ৳

১০ বছর মেয়াদী ৪৮ পৃষ্ঠার পাসপোর্ট সংশোধন ফিঃ

  • নিয়মিতঃ ৫,৭৫০ ৳
  • জরুরীঃ ৮,০৫০ ৳
  • অতি জরুরীঃ ১০,৩৫০ ৳

৫ বছর মেয়াদী ৬৪ পৃষ্ঠার পাসপোর্ট সংশোধন ফিঃ

  • নিয়মিতঃ ৬,৩২৫ ৳
  • জরুরীঃ ৮,৬২৫ ৳
  • অতি জরুরীঃ ১২,০৭৫ ৳

১০ বছর মেয়াদী ৬৪ পৃষ্ঠার পাসপোর্ট সংশোধন ফিঃ

  • নিয়মিতঃ ৮,০৫০ ৳
  • জরুরীঃ ১০,৩৫০ ৳
  • অতি জরুরীঃ ১৩,৮০০ ৳

 পাসপোর্টের তথ্য পরিবর্তন/সংশোধন আবেদন ফরম

পাসপোর্ট ডেলিভারি সময়ঃ

সরকারী নিয়ম অনুসারে নিয়মিত পাসপোর্ট ২১ কর্ম দিবসে, জরুরী পাসপোর্ট ৭ কর্ম দিবসে এবং অতি জরুরী পাসপোর্ট ৩ কর্ম দিবসে ডেলিভারি দেওয়া হয়।

তবে আবেদনে কোন প্রকার ভুল থাকলে এবং প্রিন্টির এ অনেক বেশী সিরিয়াল থাকলে পাসপোর্ট ডেলিভারি দেরি হয়।

উপরে দেওয়া তথ্যের মধ্যে যদি আপনার পাসপোর্ট সংশোধন করতে কি কি লাগবে তা বুঝতে না পারেন এবং ই পাসপোর্ট সংশোধন ফি অথবা পাসপোর্টের পৃষ্ঠা সম্পর্কে কোন প্রশ্ন থাকে তবে দ্বিধা না করে নিচে কমেন্ট করে জানাবেন। আমরা চেষ্টা করব দ্রুত সময়ে আপনার প্রশ্নের উত্তর দিতে।

নতুন পাসপোর্ট করার নিয়ম : পাসপোর্ট করতে কি কি লাগে

Leave a Comment